আপনাকে স্বাগতম!

আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করার জন্য ধন্যবাদ।

শেরপুরে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ নির্যাতন, এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা

শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেধাবী কলেজছাত্রী আশরাফুন্নাহার লোপা।
শেরপুর সদরের দমদমা মহল্লার ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলামের মেয়ে কলেজছাত্রী আশরাফুন্নাহার লোপার সঙ্গে প্রায় দেড় বছর আগে বিয়ে হয়েছিল পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহিনুল ইসলামের। সবাই ভেবেছিল সুখের সংসারই বুঝি হবে তাদের। কিন্তু সেই ভুল ভেঙে দিতে বেশি সময় নেননি শাহিনুল। যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে প্রায়ই শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন তিনি। কিন্তু মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বারবারই শাহিনুলকে ক্ষমা করে দিতেন লোপার বাবা-মা। কিন্তু এবার আর তা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি যৌতুকের দাবিতে শাহিনুলের অমানুষিক নির্যাতনে শরীরজুড়ে ক্ষত নিয়ে লোপা এখন শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মোবারক হোসেন জানিয়েছেন, নির্যাতনে লোপা ডান চোখ, কোমর, গলা, পিঠে ও পায়ে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। তার অবস্থা সংকটাপন্ন।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার লোপার মা সেলিনা আক্তার লাকী বাদী হয়ে শাহিনুলসহ ছয়জনের নামে শেরপুরের শ্রীবরদী থানায় একটি নির্যাতনের মামলা করেছেন।

শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্রী লোপা জানান, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই শাহিনুল যৌতুকের দাবিতে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। কয়েক মাস আগে শাহীন র‌্যাব থেকে বদলি হয়ে ঢাকায় মিন্টো রোডের গোয়েন্দা শাখায় যোগ দেন। ২০ মে তিনি চার দিনের ছুটিতে এসে তাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান এবং ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু লোপা যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় ২২ মে রাতে শাহিনুল তার ওপর নির্যাতন চালান। এতে লোপা গুরুতর আহত হন। ঘটনা শুনে লোপার মা-বাবা তার শ্বশুরবাড়িতে গেলে শাহিনুল তাকে শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তির কথা বলে ঢাকার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে ফের যৌতুকের দাবিতে লোপার ওপর নির্যাতন চালান।

লোপা আরও জানান, শাহিনুল বাসা থেকে বের হওয়ার সময় তাকে বাইরে থেকে দরজায় তালা দিয়ে যেতেন। গত ৩ জুন সকালে শাহিনুল ভুল করে তার মোবাইল ফোন বাসায় রেখে যান। এ সুযোগে লোপা তার মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনা জানান। পরে পরিবারের লোকজন ঢাকায় গিয়ে খিলগাঁও থানা পুলিশের সহায়তায় মধ্যরাতে লোপাকে উদ্ধার করেন। গত রোববার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

লোপার মা অভিযোগ করেন, এর আগেও দু’বার শাহিনুল তার মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন করেছেন। দু’বারই কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়ায় এবং মেয়ের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে তারা শাহিনুলকে ছাড় দিয়েছিলেন।

বিষয়টি নিয়ে এসআই শাহিনুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

মামলা প্রসঙ্গে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস আলম বলেন, ওই গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন!

Post a Comment

আগের পোস্ট পরের পোস্ট

نموذج الاتصال