জামালপুরিয়ানে আপনাকে স্বাগতম প্রিয় পাঠক বন্ধু |

গল্প : প্রাইজবন্ড | মনন মাহাদি | Story : Prizebond | By Monon Mahadee



প্রাইজবন্ডের রেজাল্ট যেদিন বের হয় সিদ্দীক মিয়া সেদিন আগ্রহ নিয়ে পত্রিকা কিনেন। হুইল চেয়ারে ভর করে রাস্তার মোড়ে হকারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। উনার মুখ চকচক করে সেই সময়।

সিদ্দীক মিয়ার স্ত্রী জাহানারা বেগমের প্রত্যাশা দুইগুণ। স্বামীকে ঘুম থেকে জাগিয়ে চা-টা খাইয়ে ঠেলে পাঠিয়ে দেন পত্রিকা আনতে।

সিদ্দীক মিয়ার তিন ছেলে-মেয়ে। এক ছেলে আর দুই মেয়ে। মেয়ে দুইজন বড়, আর ছেলে সবার ছোট। মেয়ে দু’জন খুব শান্ত শীষ্ট। পড়াশুনাতেও ভালো। ছেলে বাউন্ডুলে। সবে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। বন্ধুদের সাথে আড্ডাতেই বেশি সময় দেয়। এই তিন ছেলে-মেয়েকে নিয়েই সব স্বপ্ন সিদ্দীক মিয়ার। তার বিশ্বাস এদের জন্যই তিনি এখনও বেঁচে আছেন। তাই তিনি স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্নে রং ছড়ান প্রতিদিন।

প্রতিবারের মত আজও পত্রিকা কিনতে বের হলেন সিদ্দীক মিয়া। হুইল চেয়ারের চাকা ঘুরাতে ঘুরাতে তিনি তার অতীতের কথা ভাবেন। বাসচালক ছিলেন তিনি। তখন সংসারে কোনই অভাব ছিল না। দারুণ সুখেই দিন কাটছিল। কিন্ত এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় সব তছনছ। বাম পা কেটে বাদ দিতে হল সাথে সাথেই। পরে ডান পাতে পচন ধরায় সেটাও বাদ দিতে হয়। হুইল চেয়ারেই তার জীবন বেঁধে যায়। তার স্ত্রী সেলাইয়ের কাজ করে কোনোমত সংসার ধরে রেখেছেন। সিদ্দীক মিয়া লম্বা দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন।

বিজয় দাস সড়কের মোড়ে প্রায় আধাঘন্টা অপেক্ষা করতে হলো তাকে। তিনি নানান কথা ভেবেভেবে বিরক্তি ঢেকে রেখেছেন। দূরে হকারকে দেখতে পেয়ে তার মন আনন্দে নেচে উঠলো। প্রত্যেকবারই এমন হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আনন্দ আর থাকে না। কবে যে আনন্দটা চূড়ান্ত হবে। হকার কাছাকাছি আসতেই সিদ্দীক মিয়া চিৎকার করে ডাকলেন, ‘এই যে হকার ভাই’।

সাইকেল থামিয়ে হকার দাঁড়ালেন। সিদ্দীক মিয়া দশ টাকার একটি নোট দিয়ে একটা প্রথম আলো চাইলেন। হকার পত্রিকা দিয়ে টাকা পকেটে নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। সিদ্দীক মিয়া গম্ভীর হয়ে বললেন, ‘এই যে ভাই, দুই টাকা ফিরত দিলেন না?’

হকার হাসি হাসি মুখে বললেন, ‘ভাই, পত্রিকা তো আট টাকা থেকে দশ টাকা হয়েছে! পত্রিকার উপরে মূল্য দশ টাকা লেখা আছে দেখেন।’

সিদ্দীক মিয়া বিমর্ষ হয়ে মূল্য দশ টাকা লেখা দেখলেন আর বললেন, ‘ও আচ্ছা, ঠিক আছে, যান।’  হকার লোকটি সাইকেলে গতি বাড়িয়ে সুরুজ শেখের চারতলা বিল্ডিং এলাকায় ঢুকে অদৃশ্য হয়ে গেল।

তিনি হুইল চেয়ার ঘুরিয়ে দ্রুত বাড়ি ফিরে এলেন। বাড়িতে প্রবেশ করেই ক্ষীরের ঘ্রাণ পেলেন। ততক্ষণে তার মাথা থেকে দুই টাকা চলে গেছে।

জাহানারা বেগম ক্ষীর নাড়তে নাড়তে বললেন, ‘না, আগেই পত্রিকা খুলবেন না। আগে মিষ্টি মুখ হবে তারপর সবাই মিলে ড্র দেখা হবে।’

সিদ্দীক মিয়া মুচকি হেসে বললেন, ‘তোমার ছেলে মানুষী স্বভাব আর গেল না। তাছাড়া আমাদের পোড়া কপাল, আমরা কি আর জিততে পারবো প্রাইজ। প্রাইজবন্ড সব ভাঙিয়ে ফেল।’

জাহানারা বেগম নরম গলায় বললেন, ‘দেখবেন লিটনের বাবা, আমরা প্রথম প্রাইজ পাবোই।’

সিদ্দীক মিয়া আক্ষেপ নিয়ে বললেন, ‘নাহ, সেটা মনে হয় আমি বেঁচে থাকতে হবে না।’

জাহানারা বেগম এবার প্রায় কেঁদেই ফেললেন। কান্না জড়িয়ে বললেন, ‘এসব অলক্ষণে কথা কেনো যে বলেন!’

সিদ্দীক মিয়া প্রসঙ্গ পাল্টে বললেন, ‘কই, ক্ষুধায় তো পেট জ্বলছে, তোমার স্প্যাশাল ক্ষীর খেতে দাও।’

আচঁলে চোখ মুছতে মুছতে জাহানারা বেগম বললেন, ‘আপনে ছেলে-মেয়েদের ডাকেন, আমি দিচ্ছি।’

রুনু ঝুনু পাশের ঘরেই পড়ছিল। মায়ের কথা শুনেই তারা হাজির। ‘আমাদের ডাকতে হবে না বাবা, আমরা এসে পড়েছি।’

সিদ্দীক মিয়া বললেন, ‘ভালো হয়েছে। যা তো ঝুনু মা লিটনকে ডেকে নিয়ে আয়।’

জি আচ্ছা বাবা বলে ঝুনু লিটনকে ডাকতে গেল। রুমের দরজায় কড়া নেড়ে ডাকলো, ‘এই ভাই, উঠ। অনেক তো বেলা হলো, আর কত ঘুমাবি।’

ঘর থেকে আওয়াজ আসে, ‘ঝুনু আপা তোমার আমার ঘুমের উপর এতো রাগ কেন? যাও তো, ঘুমাতে দাও।’

ঝুনু শান্ত গলায় বলল, ‘ভাই, না উঠলে কিন্তু ক্ষীর পাবি না।’

লিটনের ক্ষীর খুব প্রিয়, তাই আর কথা বাড়াতে হলো না। ঝটপট বিছানা থেকে উঠে কল ঘরে চলে গেল। লিটন হাত মুখ ধুয়ে এলে সবাই একসাথে খাওয়া শুরু করল। সিদ্দীক মিয়া লিটনের খাওয়া দেখে বললেন,‘আস্তে আস্তে খা বাবা, যেভাবে খাচ্ছিস যেনো কোনোদিন খাসনি। নাকি ট্রেন ধরবি’।

চুপচাপ থাকা লিটন এবার মুখ খোলে, ‘যাও তো বাবা, তোমার সবকিছুতেই খালি ঠাট্টা।’ রুনু ও ঝুনু হেসে উঠে। তাদের মা জাহানারা বেগম ধমক দেয়, ‘হাসি বন্ধ, চুপচাপ খেয়ে শেষ কর।’

খাওয়া শেষ হলে সিদ্দীক মিয়া ঝুনুকে বললেন, ‘যা তো ঝুনু মা ঘরে টেবিলের নিচে একটা কাগজে প্রাইজবন্ডের নম্বরগুলো লেখা আছে। সেটা তাড়াতাড়ি নিয়ে আয়। তোদের মা বুঝি এবার লাখপতি হয়েই গেল।’

একটা হাসির রোল পড়ে গেল সিদ্দীক মিয়ার নরম রসিকতাই। কাগজটি দেখে তিনি মিলাতে লাগলেন, ‘০০৯২৩, ইস, আর দুইটা নম্বরের জন্য হাতছাড়া হয়ে গেল। না, লিটনের মা, এবারও হলো না।’ সবাই বিষন্নমুখে যার যার কাজে চলে গেল। এই ব্যাপারটায় সবাই অভ্যস্তই হয়ে গেছে। কিন্তু তাদের স্বপ্ন ও আশা  এখনও কমেনি।

২.
বিকেলে বারান্দায় বসে সিদ্দীক মিয়া পত্রিকা পড়ছিলেন। পত্রিকায় ধর্ষণ, খুন, দুর্ঘটনা, মৃত্যু, রাজনীতির খবরই বেশি। সড়ক দুর্ঘটনার খবরগুলো পড়ে তার বুকের ভিতর হু হু করে। আন্তর্জাতিক খবরের পাতায় ‘প্রথমে লটারিতে ১০ হাজার, পরে ১০ লাখ ডলার’ শিরোনামে চোখ আটকে যায় তার। বিট্রিশ নাগরিক কিম্বারলির পরপর দুটি লটারি জেতার খবর। খবরটি কয়েকবার পড়লেন তিনি। আর ভাবতে লাগলেন  ‘ইস, আমাদের ভাগ্যও যদি এমন সুপ্রসন্ন হতো।

‘সিদ্দীক মিয়া, ও সিদ্দীক মিয়া’। 

আবুল কালাম হাজি সাহেবের ডাকে সংবিত ফিরলো সিদ্দীক মিয়ার। মুখের উপর থেকে পত্রিকা সরালেন তিনি। নানান কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়েই পড়েছিলেন। ‘আরে হাজি সাহেব যে, আসসালামু আলাইকুম।’

‘ওয়া আলাইকুম আসসালাম।’ সালামের উত্তর দিয়ে চশমা মুছতে থাকেন হাজি সাহেব।

‘বসেন হাজি সাহেব।’ সামনের প্লাস্টিকের চেয়ারটি দেখিয়ে বলেন সিদ্দীক মিয়া।

হাজি সাহেব বলেন, ‘ না মিয়া, বসতে পারবো না। ঘটনা হলো কাল আমার ছেলে জনির জন্মদিন। একটা ছোট্ট আয়োজন করেছি। তুমি অবশ্যই আসবা কিন্তু।’

‘ও, আচ্ছা। অবশ্যই।’ বলে মুখে নকল হাসি নিয়ে এসে হে হে করলেন সিদ্দীক মিয়া।

‘হ্যাঁ, মনে থাকে যেন, আগামীকাল দুপুরে। আমি এখন আসি, আরও কয়েকজনের বাসায় গিয়ে দাওয়াত দিতে হবে।’ হাজি সাহেব চশমা পড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন।

অবশ্যই যাবেন বলে সিদ্দীক মিয়া চিন্তায় পড়ে গেলেন। খালি হাতে প্রাইজ ছাড়া তো আর যাওয়া যায় না। হাতে নগদ টাকাও নেই। তাহলে কি নিয়ে যাবেন। হ্যাঁ, একটা জিনিস আছে প্রাইজবন্ড। একটা প্রাইজবন্ড নিয়ে যাবেন ভেবে মন শান্ত করলেন। উনার স্ত্রীকে বলার পর তিনিও রাজি হলেন।

পরেরদিন দুপুরে ছোট মেয়ে ঝুনুকে নিয়ে সিদ্দীক মিয়া জন্মদিনের দাওয়াতে গেলেন।তাদের বাড়ি থেকে দশ বাড়ি দূরে হাজি সাহেবের বাড়ি। ঝুনু হুইল চেয়ার ঠেলে ঠেলে পুরো পথ নিয়ে গেল। বাড়ির উঠানে প্যান্ডেল সাজিয়ে এক হুলুস্থুল অবস্থা। যেন রাজকীয় বিয়ে হচ্ছে। তিনি লজ্জিত মুখে জনির হাতে প্রাইজবন্ডটি গুঁজে দিলেন। 

তবে খেতে বসে তিন প্লেট পোলাও মাংস খেয়ে ফেললেন। খাওয়ার পর দই দেওয়া হল। ঝুনু আবার দই খায় না, কাজেই উনাকে দুইজনেরটাই খেতে হলো। আসার পথে সাজিয়ে রাখা পানের থালা থেকে একটি পান মুখে দিলেন।

পিচ করে পানের পিচকি ফেলে তিনি বললেন, ‘বুঝলিরে ঝুনু মা, হাজি সাহেব বিরাট দিলদরিয়া। মানুষ তো বিয়ের আয়োজনও এমন বিরাট করে না। বললেন ছোট আয়োজন, অথচ দেখ কি কান্ড!’

হিজাব ঠিক করতে করতে ঝুনু বলল, ‘হ্যাঁ বাবা, তবে আফসোস।’
‘কেন আফসোস? কমতি কই দেখলি?’
না মানে, আপারে নিয়ে আসলে ভালো হতো।’
‘ও..., দেখিস মা, তোদের বিয়ে আমি ধুমধাম করে দিব। তখন একজন আরেকজনের বিয়ে খাবি।’
ঝুনু কিছু বললো না, শুধু মুচকি মুচকি হাসলো। হুইল চেয়ারের পিছনে থাকায় সিদ্দীক মিয়া ঝুনুর মুচকি হাসিও দেখতে পারলেন না।

৩.
এরপর তিনমাস কেটে গেল। প্রাইজবন্ডের ড্র হলো। এবার আর সিদ্দীক মিয়ার কোনো আগ্রই নাই। বিকেলে ফটোকপির দুকানে গিয়ে ড্রয়ের ফলাফল কপি করে আনবেন ভাবলেন।

বিকেল বেলা তাই করলেন, বিজয় দাস সড়কের মোড়ে রফিকের ফটোকপির দোকান থেকে কপি করে আনলেন ড্রয়ের ফল। প্রাইজবন্ড মিলাতে বসলেন একাএকা। ভাবলেশহীন মন। আগ্রহ মরে গেছে।

তার স্ত্রী ঘরে ঢুকে বললেন, ‘কি অবস্থা?’

তিনি কোন কথা বললেন না। হঠাৎ চোখ চকচক করতে লাগলো। জোরে জোরে বলতে লাগলেন , ‘০২৭৭৫৫৬!’ হাসতে গিয়েও হাসতে পারলেন না। দ্রুত হুইল চেয়ার ঘুরিয়ে গিয়ে আলমিরার ড্রয়ার খুলে বারবার প্রাইজবন্ডটি খুঁজলেন। নাহ, যেটা মিলেছে সেটা নেই, বাকি সবগুলোই আছে। তিন মাস আগে হাজি সাহেবের ছেলের জন্মদিনে যেটা দেওয়া হয়েছিল সেটাই মিলেছে।

জাহানারা বেগম অজ্ঞান হয়ে গেলেন। সিদ্দীক মিয়া হায় হায় করতে লাগলেন। এখন কি করবেন। রুনু ঝুনু বাবার হাকডাক শুনে দৌঁড়ে আসলো। ‘কি হয়েছে বাবা? মা’র কি হয়েছে?’

‘তাড়াতাড়ি বালতিতে পানি এনে মাথায় ঢাল।’

পানি ঢালার পর জাহানারা বেগম স্বাভাবিক হলেন কিছুটা কিন্তু চুপচাপ হয়ে রইলেন। কারও সাথে কথা বললেন না। লিটন এই প্রথম বাড়িতে এসে কোনো ধমক খেল না। ব্যাপারটা তার বেশ ভালোয় লাগলো। সে নিজেই চুপচাপ খেয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়লো। কি দরকার ঝামেলা বাড়িয়ে!

সিদ্দীক মিয়া রাতে ঘুমাতে পারলেন না। হুইল চেয়ারে বসেই রাত পাড় করে দিলেন।

সকাল ১০ টার পর তিনি হাজি সাহেবের বাড়িতে গেলেন। এই সময় হাজি সাহেব কাজে চলে যান। তার স্ত্রী ফিরোজা পারভিন বাসায় থাকেন। তিনি সরল সোজা মহিলা।

সিদ্দীক মিয়া গলার স্বর করুণ করে বললেন, ‘ভাবি, একটা বিপদে যে পড়েছি।’

ফিরোজা পারভিন অবাক হয়ে বললেন, ‘কিসের বিপদ? টাকা ধার-টার লাগবে নাকি?’

‘না, না, ভাবি, টাকা তো না। আসলে একজন আমার কাছে প্রাইজবন্ড রাখতে দিয়েছিল। এখন সে আবার ফেরত চাচ্ছে।’ অনেক কষ্টে কথাটা বলে ফেললেন সিদ্দীক মিয়া।

‘তা আমি কি করবো! ফেরত চাচ্ছে দিয়ে দেন, ঝামেলা শেষ!’

‘ভাবি, তার মধ্যে একটা তো জনির জন্মদিনে জনিকে দিয়েছিলাম। তখন হাতে টাকা পয়সা কিছুই ছিল না। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই দিয়েছিলাম।’

‘ও, এই ব্যাপার, এটা কোনো বিপদই না! ভাই একটু বসেন, আমি ভিতর থেকে আসছি।’

এই বলে ফিরোজা পারভিন ভিতরের ঘরে চলে গেলেন। সিদ্দীক মিয়া ঝিম ধরে হুইল চেয়ারে বসে আছেন। তার বুকের ভিতরে ধুক ধুক করা বেড়ে চলেছে। অস্থিরতাও বেড়ে যাচ্ছে। উল্টা পাল্টা কথা মনে এসে পড়ছে, এই বুঝি ফিরোজা  ভাবি বটি নিয়ে দৌঁড়ে আসছেন। অগ্নিমূর্তী রূপ উনার। মনকে স্থীর করার জন্য রুনু ঝুনুর বিয়ে দেওয়ার কথা ভাবতে লাগলেন। এতে কোনো লাভ হলো না। মাথা থেকে বটি যাচ্ছে না।

ফিরোজা পারভিন কিছুক্ষণ পর ফিরে এলেন। উনার হাতে পেচানো প্রাইজবন্ড। ‘এই নিন ভাই।’

সিদ্দীক মিয়া যতটা সম্ভব স্বাভাবিক হয়ে প্রাইজবন্ডটা নিলেন। পেচানোটা ছাড়িয়ে নম্বরটি দেখে নিশ্চিত হলেন। কিন্তু বুঝতে দিলেন না। মুখে বললেন, ‘বাঁচালেন ভাবি। এই নিন এই টাকাটা রাখুন, জনিকে কিছু কিনে দিয়েন।’

‘আরে ভাই, থাক, থাকতো, লাগবে না।’
‘না ভাবি, তাই হয় না। রাখেন তো!’
ফিরোজা পারভিন ইতস্তত করে টাকাটা নিলেন।
‘আচ্ছা ভাবী এখন আসি, ভালো থাকবেন।’

ফিরোজা পারভিন জবাব দেওয়ার ফুরসতই পেলেন না। জনির কান্না শুনে দৌঁড়ে ভিতরে চলে গেলেন।

সিদ্দীক মিয়া বুক পকেটে প্রাইজবন্ডটি ভাঁজ করে রেখে হুইল চেয়ার ঘুরিয়ে নিলেন। সামনে তার স্বপ্নের ভবিষ্যৎ। #
অক্টোবর, ২০১৬
পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন!

1 Comments

আগের পোস্ট পরের পোস্ট

نموذج الاتصال