আপনাকে স্বাগতম!

আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করার জন্য ধন্যবাদ।

বিএনপিকে মুসলিম লীগ বানায়েন না : প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বিএনপিনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আপনি নির্বাচনে আসেন। বিএনপিকে মুসলিম লীগ বানায়েন না। আপনি যদি আগামী নির্বাচনে না আসেন এই বিএনপি হবে মুসলিম লীগের মতো দল। তাই বিএনপিকে রক্ষা করতে হলে আগামী নির্বাচনে আসেন। জনগণ যাকে রায় দিবে সেই রায়ই আমরা মেনে নিবো।

প্রতিমন্ত্রী শুক্রবার বিকেলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্রের বিজয় দিবসের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নেন এবং শোভাযাত্রা শেষে শহরের জাহেদা সফির মহিলা কলেজের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

মির্জা আজম আরও বলেন, খালেদা জিয়া আবারও দু:স্বপ্ন দেখছেন। নির্বাচনের ব্যাপারে তার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ। খালেদা জিয়া নির্বাচনে গেলেও নির্বাচন হবে। না গেলেও নির্বাচন হবে। খালেদা জিয়াকে মনে রাখতে হবে যে, টিকিট কাটলেও ট্রেন যায়। কেউ টিকিট না কাটলেও ট্রেন যায়।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার কাছে টেলিফোন প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, জিয়াউর রহমানের চক্রান্তেই শেখ হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয়েছে। এই বাংলাদেশের এমন কোনো মানুষ নেই যে রাজনৈতিক স্বার্থে আলোচনায় বসার জন্য কারও পিতার হত্যাকারীর সাথে কথা বলবে। আমরা কোনো সাধারণ মানুষ হলে এ নিয়ে এতো তোড়জোড় করতাম না। কিন্তু সেই দিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের গণমানুষের স্বার্থে, সংগঠন রক্ষার স্বার্থে সেদিন শুধু আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নয়, তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করেছিলেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬০ বার টেলিফোন করার পরও খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেলিফোন ধরেননি। তখন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর সাথে কি ধরনের আচরণ করেছেন, একজন ভদ্র ঘরের সন্তান, একজন ভদ্র মানুষ, একজন বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ আকেজন মানুষের সাথে এমন দুর্ব্যবহার করতে পারে, আমাদের কারও জানা নেই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিন্তু শেখ হাসিনা দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষার স্বার্থে সেদিন তিনি খালেদা জিয়াকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলেন। বলেছিলেন যে আপনারা শুধু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। কিন্তু খালেদা জিয়া ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন নির্বাচন আর হবে না। আর যদি নির্বাচন না হতো একটি অপশক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতো। খালেদা জিয়া ভেবেছিলেন সেনাবাহিনী ক্ষমতায় আসবে। তাদের সাথে যোগাযোগ করে ক্ষমতার একটা ভাগ খালেদা জিয়া নিবেন। এভাবেই খালেদা জিয়া নির্বাচনের আগে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তাই তিনি নির্বাচনে অংশ নেন নাই। বাংলাদেশের মানুষ যাতে ভোটকেন্দ্রে না যেতে পারে সেজন্যই নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনার ডাকে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ডাকে সাড়া দিয়ে শতকরা ৫৫ ভাগ মানুষ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়েছিল। খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন নাই যার কারণে আমরা ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলাম।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরপরও খালেদা জিয়া ওই নির্বাচন ও পার্লামেন্টকে যাতে বহির্বিশ্বের কেউ যাতে স্বীকৃতি না দেয় তারও ষড়যন্ত্র করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের কয়েক মাস পরেই আন্তর্জাতিক পার্লামেন্টারিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের-আইপিএ নির্বাচনে শেখ হাসিনা সাবের হোসেন চৌধুরীকে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছেন। সারাবিশ্বের সংসদ সদস্যদের বিপুল ভোটে সেদিন সাবের হোসেন চৌধুরী আইপিএ-এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের-সিপিএ নির্বাচনে বাংলাদেশের স্পিকার শিরিন শারমীনও বিপুল ভোটের ব্যবধানে সিপিএ-এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন। এরপরও খালেদা জিয়ার লজ্জা হয় না। এরপরও খালেদা জিয়া এই সংসদকে অবৈধ সংসদ বলেন।

প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বিগত চার বছরের দেশ পরিচালনায় দেশব্যাপী এবং জামালপুর জেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বাস্তবায়িত এবং প্রস্তাবিত সকল প্রকার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, শেখ হাসিনার এই উন্নয়নকে রক্ষা করতে হবে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে রক্ষা করতে হবে। তার প্রয়োজনেই চলতি বছরের ডিসেম্বরে যে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে আবারও শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসাতে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষদের প্রতি বেগম খালেদা জিয়ার যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জামালপুর পৌরসভার মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ব ম জাফর ইকবাল জাফু, ছানোয়ার হোসেন ছানু, আব্দুল্লাহ আল আমিন চাঁন, জামালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি মুখলেছুর রহমান জিন্নাহ, পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সাইদা আক্তার, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি কৃষিবিদ মুখলেছুর রহমান, জেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি মশিউর রহমান বাবু, জেলা যুবলীগের সভাপতি রাজন সাহা রাজু ও সাধারণ সম্পদক ফারহান আহমেদ, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাকছুদ বিন জালাল প্লাবন, জেলা যুব মহিলালীগের আহ্বায়ক ফারজানা ইয়াসমিন লিটা, জেলা তাঁতীলীগের আহ্বায়ক মো. বদরুদ্দোজা প্রমুখ।

এ ছাড়াও সমাবেশে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ, কৃষকলীগ, তাঁতী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবমহিলা লীগসহ সকল অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী এ সমাবেশ ও শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।

খোঁজার শব্দ: Mirza Azam mp, মোস্তফা মনজু, জামালপুর, mustafa monzu, জামালপুরের খবর, খবর, নিউজ, Jamalpur, আওয়ামী লীগ, রাজনীতি, politics, online jamalpur,
পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন!

Post a Comment

আগের পোস্ট পরের পোস্ট

نموذج الاتصال