শনিবার রাতে


একটা ঘটনা বলি।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাতের ঘটনা। আটটার পর হবে। বিরক্তি কমাতে উঠানে হাঁটাহাঁটি করছিলাম। আর আকাশ কুসুম ভাবছিলাম। 

হঠাৎ শুনি হাসান সাহেবদের বাড়ির পুরনো ঘরের চালে কিছু পড়ার শব্দ। ঘটনা কী? আমাদের কলতলা থেকে স্পষ্ট লক্ষ করা যায়। চোখ দিতেই আবার চালে নারিকেল গাছ থেকে কিছু পড়ার শব্দ পেলাম। নারিকেল গাছের পাতাও নড়ছিল। 

বাদুড়, বা কাঠবিড়ালি হবে কিনা ভাবলাম। কাঠবিড়ালির ইতিহাস আছে অবশ্য। কিন্তু বহুদিন দেখা যায়নি। একটা ছিল। আমাদের গাছে বরই খেতে আসতো। এবার বড় ইঁদুর এসে সব কুচিকুচি করেছে। 

যাই হোক মূল ঘটনায় আসি। ভালো করে বুঝার জন্য হাসান সাহেবদের মূল ফটকের সামনে গেলাম। দেখি একটি থলি ভরে সেটিসহ এক ছেলে গাছ থেকে নামছে। ওদিকে আবার কলতলা থেকে ছোটবোন দেখে ফেলে চোর চোর বলে চিৎকার দিয়ে উঠলো। আমি আবার আতঙ্কিত হলাম ধারালো কিছু সাথে আছে কিনা ভেবে। 

তবে ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম দেখে বেচারা আর পালাতে পারলো না। বিশ্বাস করবেন না। ভয়ে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠ আর চেহারা দেখে এতো মায়া লাগলো যে চোরকে মার পিটুনি দেওয়ার ঘটনা ঘটলো না। ভাগ্যিস বাড়িতে কোন পুরুষরা ছিল না তখন। তাই!  বাসিন্দারাও বের হয়ে এসে এটা সেটা জিজ্ঞাসই করলো শুধু। আম্মা একটি লোককে ডেকে আনলো, তিনিও মুখে কিছু বলা ছাড়া আর তেমন কিছু করলেন না বড়। 

তিন বন্ধুর ডাব খাওয়ার শখ হয়েছিল তাই এই কাণ্ড। তবে বাকি দুইজন বিপদ টের পেয়ে আগেই সটকে পড়ে।  পেশাদার চোর নয়। কলেজপড়ুয়া হয়ে চোর হয়ই বা কেমন করে বলুন। 

ছোটবোন অনেক রাগ করলো- হাস্যকর ঘটনা। কি সুন্দর চোরকে দাঁড়া করাইয়া সবাই চাইয়া আছে। 

পাড়া তিনটা ডাব দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল শুনলাম। 

তবে মূল কথা যেটা বলতে চাই। আম্মা একটি আঞ্চলিক প্রবচন ব্যবহার করলো ঘটনাটির পরিপ্রেক্ষিতে। 

"ছেলেডার মায়ে নাইয়ের পাতা বিলাইছিলো! এজইন্যে বাইচা গেলো আইজকা।"

মাইনষেরা নাকি বলে। মাইনষের কাছে শুনেছিল আম্মা।

আপনারা কি শুনেছিলেন?

Post a Comment

Previous Next

نموذج الاتصال