নানা কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে জামালপুরে সোমবার ১৩ কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ৬৯তম জন্মবার্ষিক উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে জামালপুরের ৬ষ্ঠ হুমায়ূন উৎসব উদযাপন পরিষদ জামালপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
উৎসবে কাটা হয় হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিনের কেক। ছবি : মোস্তফা মনজু |
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, জামালপুর শহরের বকুলতলা থেকে আজ সোমবার সকালে আনন্দ পদযাত্রায় অংশ নিয়ে ৬ষ্ঠ হুমায়ুন উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কবি ও রাজনীতিবিদ আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ। পদযাত্রা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
উৎসব অনুষ্ঠানে বেলা ১১টায় হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’র প্রদর্শনী, বিকেলে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং সন্ধ্যায় হুমায়ূন আহমেদ বিষয়ক জ্ঞান জিজ্ঞাসা, আলোচনা সভা, রাফেল ড্র, জন্মদিনের কেককাটা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উৎসব অনুষ্ঠানে বেলা ১১টায় হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’র প্রদর্শনী, বিকেলে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং সন্ধ্যায় হুমায়ূন আহমেদ বিষয়ক জ্ঞান জিজ্ঞাসা, আলোচনা সভা, রাফেল ড্র, জন্মদিনের কেককাটা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
লেখক হুমায়ুন আহমেদ স্মরণে আনন্দ পদযাত্রা। ছবি : জামালপুরিয়ান |
লেখক হুমায়ুন আহমেদের সাহিত্য ও জীবনী বিষয়ক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন হুমায়ূন উৎসব উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা ও জামালপুর জিলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক হিশাম আল মহান্নাভ। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজমের লেখা প্রবন্ধ ‘মিসির আলী আমাদেরই লোক’ পাঠ করেন হুমায়ূন উৎসবের আহবায়ক মাহদীন আল নাফি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাসেল সাবরিন লেখক হুমায়ূন আহমেদের মূল্যায়ন করে বলেন, যখন ঢাকায় থাকতাম তখন হুমায়ুন আহমেদের বইয়ের প্রতি খুব আগ্রহ থাকতো। খুব পড়তাম। হেমিলনের বংশীবাদকের বাঁশির সুরের মতোই আমাদের টানতো ঐ সময়। এখনও তিনি আমাদের মাঝে রয়ে গেছেন। থাকবেন যুগ যুগ ধরে।
প্রবন্ধ পাঠ করেন মাহদীন আল নাফি। ছবি : জামালপুরিয়ান |
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হুমায়ূন আহমেদের ভক্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, কি নাই হুমায়ুন আহমেদের লেখায়। হাসি, কান্না সবই আছে। তিনি ব্যাপক পড়াশোনা করতেন। সাগরের সমান পড়তেন। পাঠক হিসেবে তার রেঞ্জ খুব বড় ছিল। তিনি বলতেন মানুষের জীবন খুব ছোট। ৭০-৮০ বছরের জীবন দিয়ে পৃথিবীর সব বই পড়ে শেষ করা যায় না। তিনি তার লেখায় সমস্যাগুলো ঘরের ভেতর থেকে তুলে আনতেন। তার মারা যাওয়া উচিৎ হয়নি। আরও কিছু দিন বেঁচে থাকা উচিত ছিল।
সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুল হাই আলহাদী বলেন, একুশে বই মেলায় আগে পাঠক কম আসতো। বই কম পাওয়া যেতো। কলকাতা থেকে বই আনা হতো। কলকাতা থেকে কবি সাহিত্যিক লেখকেরা আসতেন। কিন্তু বাংলা সাহিত্যে হুমায়ূন আহমেদ এসে আমাদের সবাইকে বইয়ের কাছে নিয়ে এলেন। বই মেলা প্রাণের মেলায় ভরে উঠলো। এখন আর আমরা পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকিয়ে থাকি না। ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষাকে সারা দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে গেছেন তিনি।
সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুল হাই আলহাদী বলেন, একুশে বই মেলায় আগে পাঠক কম আসতো। বই কম পাওয়া যেতো। কলকাতা থেকে বই আনা হতো। কলকাতা থেকে কবি সাহিত্যিক লেখকেরা আসতেন। কিন্তু বাংলা সাহিত্যে হুমায়ূন আহমেদ এসে আমাদের সবাইকে বইয়ের কাছে নিয়ে এলেন। বই মেলা প্রাণের মেলায় ভরে উঠলো। এখন আর আমরা পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকিয়ে থাকি না। ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষাকে সারা দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে গেছেন তিনি।
উৎসবের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। ছবি : জামালপুরিয়ান |
জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্বরূপ কাহালি বলেন, হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যকর্ম ছিল সহজবোধ্য। মানুষদের তিনি খোলস থেকে বের করে আনতেন। তিনি বাঙালিকে বই পড়ার দিকে ঢুকিয়েছিলেন। তার লেখায় সবকিছুই পাওয়া যায়।
ঝাওলা গোপালপুর কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারিকুল ফেরদৌস বলেন, হুমায়ূন আহমেদ আধুনিক বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য সাধারণ নাম। তিনি হাস্যরসিক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে কথাসাহিত্যিক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, নাট্যকার থেকে সব গুণই ছিল তার মধ্যে। তরুণদের মন জয় করে গেছেন তিনি। রবীন্দ্র-নজরুলের পরে বাংলা সাহিত্যে তার মতো আর কেউ নেই বলে আমার মনে হয়।
ঝাওলা গোপালপুর কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারিকুল ফেরদৌস বলেন, হুমায়ূন আহমেদ আধুনিক বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য সাধারণ নাম। তিনি হাস্যরসিক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে কথাসাহিত্যিক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, নাট্যকার থেকে সব গুণই ছিল তার মধ্যে। তরুণদের মন জয় করে গেছেন তিনি। রবীন্দ্র-নজরুলের পরে বাংলা সাহিত্যে তার মতো আর কেউ নেই বলে আমার মনে হয়।
উৎসবে শ্রোতা-দর্শকবৃন্দ। ছবি : জামালপুরিয়ান |
আলোচনা সভা শেষে জ্ঞান জিজ্ঞাসা এবং শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পরে প্রধান অতিথি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাসেল সাবরিন অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনের কেক কাটেন। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
উৎসবে গান গায় গৌরব চন্দ। ছবি : জামালপুরিয়ান |
অনুষ্ঠানে হুমায়ূন আহমেদ উৎসব উপলক্ষে ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল ও কুদ্দুস বয়াতির ভিডিও বার্তা দেখানো হয়। এ ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের লেখা বই নিয়ে মেলা বসে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রক্তের বন্ধন বিনামূল্যে রক্তের শ্রেণি নির্ণয় করে।
উৎসব আয়োজনে সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন উদযাপন পরিষদের সংগঠক ফজলে রাব্বী সৌরভ ও সদস্যবৃন্দ।
উৎসব আয়োজনে সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন উদযাপন পরিষদের সংগঠক ফজলে রাব্বী সৌরভ ও সদস্যবৃন্দ।
খোঁজার শব্দ: মোস্তফা মনজু, জামালপুর, mustafa monzu, জামালপুরের খবর, খবর, নিউজ, Jamalpur, online jamalpur, humayun ahmed,
পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন!