এবার মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ১৯৫২ সালের বাংলাভাষার জন্য আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের শহীদ মিনারে। জামালপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় সাংস্কৃতিক পল্লী স্থাপনের কাজ শুরু হওয়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলায় জেলা প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাংস্কৃতিক পল্লী প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর নতুন করে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জামালপুর জেলায় নানা কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে জেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে এক প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় এবারের মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি পুষ্পস্তবক অর্পণের স্থান নির্ধারণ করা হয় জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয় শহীদ মিনারে। সভায় জানানো হয়, এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো- সকল গোষ্ঠী/জাতির নিজস্ব ভাষায় কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি ও মর্যাদা রক্ষা করা। সভায় দিবসটি উদযাপনের বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়।
জানা গেছে, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ২১ ফেব্রুয়ারি রাত শূন্য এক মিনিটে জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা করা হবে। একই দিনে ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনে অর্ধনমিতভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাতটায় জামালপুর শহরের তমালতলা মোড় থেকে প্রভাতফেরি যাবে জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয় শহীদ মিনারে এবং সেখানে সরকারি-বেসরকারি, রাজনৈতিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ সর্বস্তরের মানুষের পুষ্পস্তবক অর্পণ।
সকাল নয়টা জামালপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে শিশুদের সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা। একই স্থানে সকাল সাড়ে নয়টায় অনুষ্ঠিত হবে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বেলা এগারোটায় প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী ও কলেজ পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে দেশাত্ববোধক গানের প্রতিযোগিতা এবং বেলা বারোটায় স্কুল ও সমপর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ‘২১ ফেব্রুয়ারি, শহীদ দিবস থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ শীর্ষক এবং কলেজ ও সমপর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ‘বাংলা সাহিত্যে একুশের চেতনা’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় জামালপুর জেলা তথ্য দপ্তরের উদ্যোগে জামালপুর রেলওয়ে স্টেশন ও জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে রয়েছে ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। সন্ধ্যা সাতটায় জামালপুর শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে ভাষাশহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী, সাংস্কৃতিক ও ভাষাসৈনিকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জামালপুর অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আয়োজন করা হয়েছে বইমেলা। এ ছাড়াও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পক্ষ থেকে জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণে বইপাঠ, স্বরচিত ছড়া, কবিতা ও একুশে সংক্রান্ত প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন!