‘আমাদের এখানে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে। আমরা এখানে অনেক ধরনের চিকিৎসাসেবা পাই। এখানে গর্ভবর্তী মায়েদের চিকিৎসাসেবা করা হয়। আমাদের সদর হাসপাতাল অনেক দূরে। সদর হাসপাতালে যেতে হলে অনেকেরই বাবা এবং স্বামীকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হয়। এখন আমরা বাড়ির কাছেই স্বাস্থ্যসেবা পাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।’
ভিডিও কনফারেন্সে সরাসরি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশস্বরূপ কথাগুলো বলছিলেন জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ি ইউনিয়নের হলকারচর গ্রামের গৃহিনী পারভীন আক্তার।
![]() |
ভিডিও কনফারেন্সে কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জামালপুরের সাথে সরাসরি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : জামালপুরিয়ান |
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘যাক এটা আপনারদের জন্যই করা। আপনারা যে আসতে পারেন নিজেরাই হেটে। আপনারা যে চিকিৎসা পান। আসলে দেওয়ানগঞ্জ এলাকাটা এতো রিমোর্ট এলাকা। আমি নিজেই গেছি সেখানে। আমি দেখেছি। নদী ভাঙন এলাকায় মানুষ খুবই কষ্ট করে। আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই যে তিনি এই কমিউনিটি ক্লিনিকটা এখানে করে দিয়েছেন। এর থেকে মানুষ সেবা পাক। সেটাই আমরা চাইবো।’
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার হলকারচর কমিউনিটি ক্লিনিকটি উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ১১ মার্চ সোমবার দুপুরে ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভারত সরকারের অনুদানে জামালপুর, শেরপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন প্রকল্পসহ চারটি প্রকল্পের উদ্বোধনী ভিডিও কনফারেন্সে উপলক্ষে দেওয়ানগঞ্জের হলকারচর কমিউনিটি ক্লিনিক প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
![]() |
ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি : জামালপুরিয়ান |
ভিডিও কনফারেন্সে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে এ চারটি প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী ঘোষণা দেন এবং বক্তব্য রাখেন। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যখাতে পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে পাশে থাকার আশা ব্যক্ত করেন। দেওয়ানগঞ্জের হলকারচর কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনে ব্যয় হয়েছে ২৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ কাজ শেষে গত বছরের ২৮ আগস্ট তা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হলে সেখানে গ্রামীণ জনপদের মানুষের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরু হয়।
উদ্বোধনী পর্ব শেষে প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা বেলা ১টা ৫৪ মিনিটে জামালপুর জেলার সাথে সরাসরি যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী কমিউনিটি ক্লিনিকের উপকারভোগী স্থানীয় গৃহিনী পারভীন আক্তারের বক্তব্য শোনেন। পরে ইসলামপুর আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মো. ফরিদুল হক খান দুলাল সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনসহ দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলায় যমুনা নদীর বাঁধ করে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
![]() |
ভিডিও কনফারেন্সে সংসদ সদস্য মো. ফরিদুল হক খান দুলাল ও জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরসহ অন্যান্য অতিথি ও দর্শকবৃন্দ। ছবি : জামালপুরিয়ান |
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খান আব্দুল হান্নান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজীব কুমার সরকার, ৩৫ বিজিবি জামালপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মো. নজরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, সিভিল সার্জন চিকিৎসক গৌতম কুমার রায়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক সৈয়দ আবু আহমেদ শাফী, দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আমিনুল হকসহ জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা-উপকারভোগী স্থানীয় গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।
পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন!